India Pakistan conflict // Sindhu River Tributaries
সিন্ধুর জল পাকিস্তান নয়, এবার ভারতেই ব্যবহার হবে! উপকৃত হবে রাজস্থান, হরিয়ানা, হিমাচল ও দিল্লি
ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক যখন তলানিতে, সেই সময় সিন্ধু নদীর জল (Indus River Water) নিয়ে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির মাঝে কৌশলগতভাবে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যা একদিকে পাকিস্তানের উপর চাপ সৃষ্টি করবে, একইসঙ্গে দেশের যে রাজ্যগুলি জলের জন্য ভুগতে থাকে তাদের জন্য হয়ে উঠবে আশীর্বাদ।
সিন্ধু চুক্তির ইতিহাস ও মূল বিষয়বস্তু:-
১৯৬০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে, বিশ্বব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় , এই ঐতিহাসিক সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি। এই চুক্তি অনুসারে:
- ভারতের অধিকার: বিপাশা , শতদ্রু , এবং ইরাবতী নদীর উপর।
- পাকিস্তানের অধিকার: সিন্ধু, বিতস্তা (ঝিলম) এবং চন্দ্রভাগা (চেনাব) নদীর উপর।
- এই চুক্তির ফলে, মোট জলসম্পদের প্রায় ৮০% পাকিস্তানের এবং মাত্র ২০% ভারতের দখলে যায়।
**সিদ্ধান্ত: পাকিস্তানের বদলে সিন্ধুর জল পাবে ভারতীয় রাজ্যগুলি
কাশ্মীরের পহেলগামে জঙ্গি হামলার পর ভারত সিন্ধু চুক্তির আওতায় পাকিস্তানে জল সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। এর পরেই শুরু হয় নতুন পরিকল্পনা। জলশক্তি মন্ত্রকের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এই জল এখন ব্যবহার করা হবে রাজস্থান, হরিয়ানা, হিমাচল প্রদেশ ও দিল্লির মতো রাজ্যগুলির জন্য।
এই চারটি রাজ্য ( রাজস্থান, হরিয়ানা, হিমাচল ও দিল্লি) বহুদিন ধরে খরার কবলে জর্জরিত। পানীয় জল ও সেচের জলের সংকট সেখানে একটি বড় সমস্যা। সিন্ধু নদীর অতিরিক্ত জল এতদিন পাকিস্তানের দিকে প্রবাহিত হয়ে অপচয় হচ্ছিল, এবার তা কাজে লাগানো হবে দেশের চাহিদা মেটাতে।
মন্ত্রীদের কড়া বার্তা: পাকিস্তান এক ফোঁটাও জল পাবে না :-
জলবিদ্যুৎ মন্ত্রী C.R. Patil স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, “পাকিস্তান এক ফোঁটাও জল পাবে না।” তাঁর দাবি, সিন্ধু জল চুক্তি ১০০% বাস্তবায়িত করা হবে এবং কোনওরকম শিথিলতা সহ্য করা হবে না। মন্ত্রক ইতিমধ্যে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরু করেছে, যাতে প্রতিটি ফোঁটা জল উপযুক্তভাবে ব্যবহার হয়।
পেছনে কি মাস্টারমাইন্ড: অমিত শাহ?
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বড় পদক্ষেপের পিছনে অন্যতম কৌশলবিদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর সভাপতিত্বে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ উঠে আসে, যা বর্তমানে বাস্তবায়নের পথে। CR Patil জানিয়েছেন, “শাহের পরামর্শগুলি ধাপে ধাপে বাস্তবায়িত হবে, যাতে প্রকল্পটি দীর্ঘমেয়াদে সফল হয়।”
উপকৃত হবে কোন কোন রাজ্যগুলো?
- রাজস্থান: বছরের বেশিরভাগ সময় খরার সমস্যায় ভোগে। নতুন জল সরবরাহ ব্যবস্থায় প্রাণ ফিরে পাবে কৃষি ও বসত অঞ্চল।
- হরিয়ানা: কৃষিনির্ভর এই রাজ্যে পানীয় জল ও সেচের সমস্যা দীর্ঘদিনের। এই সিদ্ধান্তে অনেকটাই স্বস্তি আসবে।
- হিমাচল প্রদেশ: পাহাড়ি অঞ্চল হওয়ায় অনেক গ্রামে এখনও পর্যাপ্ত জলের ব্যবস্থা নেই। নতুন প্রকল্পে সেই সমস্যার সমাধান হবে।
- দিল্লি: রাজধানীতে জলের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। সিন্ধুর জল রাজধানীর বাসিন্দাদের জন্য হতে পারে এক বড় রিলিফ।
শেষ কথা:
কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত শুধু কৌশলগত নয়, বরং এটি ভারতীয়দের মৌলিক চাহিদা—জল—পূরণের এক সাহসী পদক্ষেপ। এতে পাকিস্তানের উপর চাপ বাড়বে, আবার ভারতের বহুদিনের জল সংকটও অনেকটাই মিটবে। আগামী দিনে এই সিদ্ধান্ত যে দেশের অর্থনীতি ও জনজীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে, সে ব্যাপারে একমত বিশেষজ্ঞরা।